আমেরিকা ও বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর যৌথ মহড়া (প্যাসিফিক অ্যাঞ্জেল ২৫-৩, টাইগার লাইটনিং ২০২৫) চট্টগ্রামে ইউএস সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে, যা প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ কারণে ভারত ও চীনের মধ্যে জিওপলিটিক্যাল টেনশন বাড়ছে, এবং মায়ানমারের সীমান্তে অস্থিরতা তীব্র হয়েছে।
১৫ সেপ্টেম্বর থেকে জহুরুল হক বিমানবেসে প্যাসিফিক অ্যাঞ্জেল ২৫-৩ মহড়া চলছে, যেখানে বাংলাদেশ, আমেরিকা ও শ্রীলঙ্কার বিমানবাহিনী অংশ নিচ্ছে। শাহ আমানত বিমানবন্দরে ইউএস এয়ার ফোর্সের সি-১৩০জে সুপার হারকুলিস অবতরণ করেছে। জুলাইয়ে সিলেটে অনুষ্ঠিত টাইগার লাইটনিং ২০২৫ ও টাইগার শার্ক মহড়া সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান ও সমুদ্রপথে নজরদারিতে গুরুত্ব দিয়েছে।
ভারতীয় বিশ্লেষকরা বলছেন, চট্টগ্রামের কৌশলগত অবস্থান—মালাক্কা প্রণালী ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কাছাকাছি—ইউএস উপস্থিতিকে “সন্দেহজনক” করেছে। চীনের বিআরআই প্রকল্প ও রোহিঙ্গা সঙ্কটের প্রেক্ষাপটে এই মহড়া দক্ষিণ এশিয়ার মহাশক্তি প্রতিযোগিতা তীব্র করছে।
মায়ানমারের রাখাইন স্টেটের আকান আর্মি (এএ) সীমান্ত দখল এবং গোলাবর্ষণের কারণে বাংলাদেশের ২৭১ কিলোমিটার সীমান্তে অস্থিরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৪-এ বাংলাদেশে ৮০,০০০ রোহিঙ্গা আশ্রয় নেওয়ার ফলে সীমান্তবর্তী এলাকায় চাপ বেড়েছে। বাংলাদেশ সরকার সীমান্তে হিউম্যানিটারিয়ান সমাধানের চেষ্টা করছে, কিন্তু আঞ্চলিক শক্তির হস্তক্ষেপের অভাবে জটিলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপের ওপর আবার রাজনৈতিক আলোচনার জন্ম হয়েছে। ২০২৪-২৫ সালের সময়ে কিছু রাজনৈতিক বিতর্কে অভিযোগ উঠেছিল যে, আমেরিকা দ্বীপটি সামরিক ঘাঁটি হিসেবে নিতে চাইছে। তবে ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং বাংলাদেশ সরকার দ্বীপটি “কোনো দেশের লিজে দেওয়া হবে না” বলেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাস্তবে দ্বীপ দখলের সম্ভাবনা কম, কিন্তু যৌথ মহড়ার মাধ্যমে আমেরিকার প্রভাব বাড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞরা সুপারিশ করছেন, বাংলাদেশকে প্রতিবেশী দেশ ও ইউএস-এর সাথে দ্বিপাক্ষিক ডায়ালগ বাড়াতে হবে এবং সেন্ট মার্টিনের মতো কৌশলগত এলাকায় নিরাপত্তা শক্তিশালী করতে হবে। ভারত-চীন টেনশন ও মায়ানমারের অস্থিরতা দক্ষিণ এশিয়ার জিওপলিটিক্যাল ভারসাম্যকে প্রভাবিত করতে পারে।
